
শ্যাম্পু দিয়ে ভালো করে চুল পরিষ্কার এবং তেল দিলেই চুলের পরিচর্যা হয়ে যায় না। এর জন্য প্রয়োজন সচেতন খাদ্যাভ্যাস। শিকাগোর কয়েকজন নিউট্রিশন এবং হেয়ার এক্সপার্ট সম্প্রতি জানালেন চুলে জন্য উপকারী কিছু খাবারের নাম। খাদ্য তালিকায় যাদের উপস্থিতি চুলকে রাখবে সুস্থ।
মাছ
শুধু ভিটামিন আর পুষ্টি না, মাছ সৌন্দর্য্যবর্ধনেও অনেক উপকারী। তবে এজন্য কাঠখড় পুড়িয়ে মাছ কোথাও মাখতে হবে না। শুধু খেলেই হবে।
আমেরিকান ডায়েটিক অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র অ্যান্ড্রিয়া গিয়ানকোলি বলেন, “বেশি বেশি করে মাছ খেলে, এটা মাথার ত্বককে রাখবে সুস্থ। কারণ, মাছে আছে চুল এবং মাথার ত্বকের জন্য উপকারী ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এর পাশাপাশি এর সঙ্গে আরো আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, আয়রন এবং ভিটামিন বি-১২।”
তিনি আরো জানান, দেহে ওমেগা-৩ নামের এই ফ্যাটি এসিডের ঘাটতি দেখা দিলে তা মাথার ত্বককে রুক্ষ করে দেয়। যা চুলের রুক্ষতার জন্যও দায়ী।
সবুজ শাক-সবজি
‘পপাই-দ্য সেইলর ম্যান’ অনেক স্পিনাচ বা সবুজ শাক খেতো। তবুও তার মাথায় চুল ছিল কম। কিন্তু সে তো কার্টুন। সুস্থ চুলের জন্য বেশি করে শাক খেলে চুল নিয়ে চিন্তা কমে যাবে।
সবুজ শাক-সবজি ভিটামিন এ এবং সি’র সবচেয়ে বড় উৎস। এই ভিটামিন এ এবং সি দেহে সিবামের উৎপাদন বাড়ায়। সিবাম হলো মাথার ত্বকের কোষে পুঞ্জীভূত থাকা এক ধরণে উপকারী উপাদান, যা প্রাকৃতিক কন্ডিশনার হিসেবে কাজ করে থাকে।
এছাড়াও সবুজ শাক-সবজি বেশি করে গ্রহনের ফলে দেহে আয়রন এবং ক্যালসিয়ামের মাত্রায় বাড়ে।
ডাল
আমাদের নিয়মিত খাদ্যতালিকায় ডাল একটি অতি সাধারণ খাবার। কিন্তু আমরা অনেকে এর গুণাগুণ না জেনেই প্রতিদিন খেয়ে থাকি ডাল। ডালে যে ডালে যে প্রোটিন থাকে তা চুলের বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।
আমেরিকান ডায়েটিত অ্যাসোসিয়েশনের আরেক ডায়েটেশিয়ান ডন জ্যাকসন ব্লান্টার বলেছেন, “আমাদের প্রতিটি চুল মাসে আধা উঞ্চি পর্যন্ত বাড়তে, যদি এদের প্রয়োজনীয় প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করা যায়।”
ব্লান্টার চুলের এই প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করার জন্য প্রতি সপ্তাহে অন্তত এক কাপ ডাল খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি আরো জানিয়েছেন, ডালে চুলের উপকারী যেসবেএবং যেড পরিমাণ প্রোটিন থাকে তা শিস, মটরশুঁটির মতো বীজজাতীয় সবজিগুলোতেও থাকে। তাই খাদ্য তালিকায় এই ধরনের সবজিও রাখা যেতে পারে সুস্থ এবং সুন্দর চুলের জন্য।
মুরগির গোশত
প্রোটিন এবং আয়রনের পাশাপাশি মুরগির গোশত মাথার ত্বকের কোষগুলোতে বাতাস এবং অক্সিজেনের চলাচলকে সহজ করে দেয়, যাকে বলে বায়োঅ্যাভেইলেবিলিটি।
দেহে যদি বায়োঅ্যাভেইলেবিলিটি না থাকে তাহলে চুল খুব সহজেই ভেঙে যায় এবং চুলের রঙ বিবর্ণ হয়ে যায়।
ডিম
পছন্দ-অপছন্দের প্রশ্ন তোলা যাবে না! চুলের সঙ্গে করা যাবে না কোনো সমঝোতা। সুস্থ ও সুন্দর চুলের জন্য ডিম অবশ্যই রাখতে হবে খাদ্য তালিকায়। কারণ এতে প্রোটিনের পাশাপাশি আছে ভিটামিন বি-১২ এবং চুলের স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী বায়োটিন।
দই
চুলের পরিচর্যার জন্য দই মাখা যায় চুলে। কিন্তু এটা নিয়মিত খেতে পারলেও তা চুলের জন্য ভালো। দই থাকা ক্যালসিয়াম, হোওয়ে এবং কেসইন নামের প্রোটিন চুলকে করে মজবুত এবং লম্বা।
গাজর
গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, যা চুলের ত্বকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি মস্তিষ্ককেও করে পরিষ্কার। সুন্দর, আকর্ষণীয়, লম্বা চুলের জন্য সুস্থ ত্বক যেমন জরুরি, তেমনি সুস্থ চিন্তা এবং স্থিতিশীল মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজন পরিষ্কার মস্তিষ্কের।
বার্তা২৪ ডটনেট